ঢাকা, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৩ পূর্বাহ্ন

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিতর্কিত “রুয়ান্ডা বিল” পাস

British-Parliamentনিজ দলের মধ্যে বিরোধ সত্ত্বেও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে সফলভাবে বিতর্কিত রুয়ান্ডা বিল পাস করাতে সক্ষম হয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ৮ ঘণ্টা বিতর্কের পর শেষ পর্যন্ত ৩১৭-২৩৭ ভোটে পাস হয় বিলটি। এর আগে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসে এই বিলের বিষয়ে দুটি আপত্তি জানানো হয়। সেই বিষয়ে হাউস অব কমন্সে বিতর্ক শুরু হয় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায়‌। পরে দীর্ঘ বিতর্কের পর মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে বিলটি পাস হয়।

single-ad-main-1

গত বছর বিলের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের রায়ে বলেছিলো,রুয়ান্ডায় অভিবাসী পাঠানো আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ। কিন্তু এতে দমে যাননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। নিজ দলের রক্ষণশীল এমপিদের বিতর্কে মুখে পড়ার পরেও হাউস অব কমন্সে বিলটি পাস করাতে সফল হন তিনি।

বিল পাসের পর সরকারি বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঋষি সুনাক বলেন,’আর কোনো যদি এবং কিন্তু নেই। ফ্লাইটগুলো রুয়ান্ডায় যাচ্ছে। আমরা প্রস্তুত,ফ্লাইটগুলো পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন,”রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ছোট নৌকায় করে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডে আসা প্রতিহত করা এখন অপরিহার্য।”

single-ad-main-2

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনাক বলেন,‘যথেষ্ট হয়েছে। আর কোনো ঝামেলা নয়। আর দেরি করা হবে না।’

এই বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই এই বিল পাস যেন কনজারভেটিভ পার্টির বিরোধ আরো চওড়া করলো বলে ধারণা করছেন অনেকেই।

মূলত যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর কঠোর অভিবাসন নীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যেটি তাঁদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ছিলো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,  এই  সিদ্ধান্ত  যুক্তরাজ্যের  সাধারণ  নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির পরাজয় ত্বরান্বিত করবে। দীর্ঘ ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর লেবার পার্টির কাছে কনজারভেটিভ পার্টির পরাজয় ঘটতে যাচ্ছে বলে ধারণা অনেকের।

নতুন বিলটি পূর্ব আফ্রিকান দেশটিকে একটি নিরাপদ দেশ হিসেবে বিবেচনা করতে বিচারকদের বাধ্য করবে এবং মন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক ও ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনের বিভাগগুলোকে উপেক্ষা করারও ক্ষমতা দেবে।

তবে এই ক্ষেত্রে হাউস অব লর্ডস দুটি সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছে। একটি সংশোধনীতে বলা হয়েছে, বিদেশে যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন এমন লোকদের নির্বাসন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।

আরেক সংশোধনীতে বলা হয়েছে, রুয়ান্ডা আসলেই নিরাপদ কিনা তা নির্ধারণ করার জন্য একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষক কমিটি গঠন করা হোক। তবে হাউস অব লর্ডস পরাজিত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, তাঁরা অনির্বাচিত এবং তাদের ভূমিকা মূলত আইনের যাচাই-বাছাই এবং সংশোধনী প্রস্তাব আনা।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন