ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। চুক্তি অনুযায়ী সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি বন্দিবিনিময় করবে দুপক্ষ। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে ইসরাইলি বাহিনী তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
রাস্তায় হাঁটার সময় লোকজন আনন্দে ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিচ্ছে, উল্লাস করছে এবং অনেকে শিস বাজিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছে।
এ অবস্থায় বাস্তুচ্যুত হাজার-হাজার ফিলিস্তিনি ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, ইসরাইল থেকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে তাদের পরিবার।
বাস্তুচ্যুত গাজা সিটির ইব্রাহিম আল-হেলু (৪০) বলেন, আমি আবেগাপ্লুত হলেও সতর্ক ছিলাম। পরিস্থিতি বিপজ্জনক ছিল, গুলিবর্ষণ হচ্ছিল, সে কারণে আমি একটু অপেক্ষা করে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলাম।
তিনি বলেন, রাস্তায় কোনো বাধা নেই, এখন আমরা গাজায় আমাদের বাড়ি ফিরে সেখানকার পরিস্থিতি দেখার উদ্দেশ্যে একসঙ্গে রওনা দিয়েছি।
মিশরের পর্যটন শহর শারম আল-শেখে বুধবার (০৮ অক্টোবর) যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হামাস ও ইসরায়েল। সেখানে গাজায় সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা ‘শান্তি পরিকল্পনা’ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে পরোক্ষ এ আলোচনা চলছিল। এতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিশর ও তুরস্ক।
বুধবার রাতে যুদ্ধবিরতিতে দুপক্ষের রাজি হওয়ার খবর প্রথম সামনে আনেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লেখেন, ‘আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েল ও হামাস—দুপক্ষই সই করেছে। এর অর্থ হলো খুব শিগগির সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। আর ইসরায়েল সমঝোতার ভিত্তিতে একটি এলাকা বরাবর সেনা প্রত্যাহার করবে। এটি শক্তিশালী, টেকসই ও চিরস্থায়ী শান্তির পথে প্রথম ধাপ।’
টানা দুই বছর ধরে ইসরাইলের ভয়াবহ হামলায় শোকে কাতর হয়ে পড়া গাজাবাসী যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর বাড়ি ফিরতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছে।
খান ইউনিস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরপরই আজ হাজার-হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি গাজা অভিমুখে যাত্রা করে।
প্রথমদিকে ভয় পেলেও বিপুল ফিলিস্তিনি গাজা সিটির পথে রওনা হয়। মধ্য গাজার অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এলাকা থেকে দলবেঁধে হেঁটে গাজা সিটির দিকে যাচ্ছে তারা।
যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে হামাস জানায়, তারা এমন এক চুক্তিতে পৌঁছেছে, যা গাজায় সংঘাতের অবসান ঘটাবে। উপত্যকাটি থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, ত্রাণ প্রবেশ ও বন্দিবিনিময়ের পথও সুগম হবে।
দেশপক্ষ/ এমএইচ









