
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ গভীর সংকটে। জনগণের ভোটাধিকার, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা সবই প্রশ্নের মুখে। নির্বাচন এখন আর জনগণের উৎসব নয়, বরং এক প্রভাবশালী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রিত প্রহসনে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হলো একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও সেবামুখী নির্বাচন কমিশন গঠন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) তার ফেসবুক পোষ্টে এমন মন্তব্য করেন।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী লেখেন, প্রথমেই, নির্বাচন কমিশনকে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রতীক তালিকা থেকে শাপলা বাদ দেওয়ার মতো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে। কোন নীতিমালা ও মানদণ্ডে এই তালিকা তৈরি হলো, তা জনগণ জানবে। গণতন্ত্রে গোপনীয়তা নয়, স্বচ্ছতাই সবচেয়ে বড় শক্তি।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সুষ্ঠু ভোট এবং ফ্যাসিবাদ উৎখাতের জন্য এখন সময় এসেছে নির্দলীয়, পরিবারতন্ত্র ও সামরিক হস্তক্ষেপমুক্ত একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনের। বর্তমান কমিশনারদের অব্যাহতি দিয়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে নতুন আইনি কাঠামোর অধীনে একটি সাংবিধানিক ইসি প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে।
এনসিপির এই নেতা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনকেও দলীয় প্রভাবমুক্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগ-নিযুক্ত কর্মকর্তাদের অপসারণ করে একটি দলমুক্ত মাঠ প্রশাসন গঠন অপরিহার্য। তবেই ভোটের মাঠে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
নাসির উদ্দিন বলেন, একইসাথে ইলেকশন কমিশনকে হতে হবে দুর্নীতিমুক্ত ও সেবামুখী। জনগণের এনআইডি সংক্রান্ত হয়রানি বন্ধ করে এটিকে একটি প্রকৃত নাগরিক সেবা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে।
তিনি বলেন, এছাড়া আওয়ামী লীগ, গোয়েন্দা সংস্থা বা আদালতের প্রভাবে যেসব রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেয়েছে, তাদের নিবন্ধন পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। ভোটার তালিকা থেকেও ১ কোটি মৃত ও ভূয়া ভোটার বাদ দিয়ে একটি স্বচ্ছ ও হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করতে হবে, যাতে জনগণ আগেই তা যাচাই করতে পারে।
পাটোয়ারী বলেন, আমাদের এই আন্দোলন কোনো প্রতীক পাওয়ার জন্য নয়। এটি জনগণের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম,যে গণতন্ত্র কোনো পরিবারের নয়, কোনো দলের নয়, কোনো সামরিক শক্তির নয়, বরং জনগণের হাতে সাংবিধানিক ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার এক ঐতিহাসিক লড়াই।
দেশপক্ষ/ এমএইচ









