বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী যুবলীগের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর)। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তে এক যুব কনভেননের মধ্য দিয়ে যুবলীগ প্রতিষ্ঠা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তৎকালীন যুব নেতা, সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মণি এ যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ফজলুল হক মনি ছিলেন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে দেশের যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এ যুবলীগকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই যুবলীগ সেই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
প্রায় পাঁচ দশকের দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যুবলীগ বর্তমানে দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন সংটকে সমাজকে সংগঠিত করে আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে যুবলীগ। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে এই সংগঠনের নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগও রয়েছে।
এ বছর এমন কঠিন একটা সময়ে যুবলীগ প্রতিষ্ঠাবাষির্কী পালন করছে। মূল সংগঠন আওয়ামী লীগের সঙ্গে দেশে কার্যক্রম পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে সংগঠনটি। গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যূত হবার পর যুবলীগের উপর অন্তবর্তী সরকার এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি হিসেবে পরিচিত জামায়াত, বিএনপির রোষানলে পড়েছে যুবলীগ। সারাদেশে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা হত্যা, নির্যাতনের শিকার হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। দলের সিনিয়র নেতারা প্রাণভয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।
দেশের কঠিন ক্রান্তিলগ্নে বসে নেই যুবলীগ। সংগঠনটির নেতাকর্মীরা প্রাণভয় উপেক্ষা করে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ ফেরাতে সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে।
যুবলীগের ৫৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের চেয়ারমান শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল দেশবাসীসহ যুব সমাজকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। েএকই সঙ্গে ৫ দিন ব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ নভেম্বর লকডাউন পালন কর্মসূচি অন্যতম। গত ৭ দিনের যুবলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকাসহ সারাদেশে লকডাউন সফল করতে মিছিল, বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে আরও রয়েছে-
১. রোববার (৯ নভেম্বর ) দেশের গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি। একই দিন সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সকল উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।২. সোমবার (১০ নভেম্বর ) শহিদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহিদ নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
৩. মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর ) বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বনানী কবরস্থানে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ শেখ ফজলুল হক মণিসহ ১৫ আগস্টে সকল শহীদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং “যুব নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আগামী বাংলাদেশ” শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
৪. বুধবার (১২ নভেম্বর ) যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আন্তর্জাতিক শাখাসমূহে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
৫. বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর ) অবৈধ ট্রাইবুনালকে প্রত্যাখ্যান, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলার রায় ঘোষণার প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় কঠোর “লকডাউন” কর্মসূচি পালন করা হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং আন্তর্জাতিক শাখা যুবলীগকে নিজ নিজ অঞ্চলের উপযোগী সময়ে উক্ত কর্মসূচিগুলো যথাযথ মর্যাদা, শৃঙ্খলা ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।