ঢাকা, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

অবৈধ সরকারের প্রহসনের শাসন বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের বিবৃতি

আজ বাংলাদেশ এক গভীরতম রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটে নিমজ্জিত। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে, সেই অসাংবিধানিক ও দখলদার সরকার আজ রাষ্ট্রকে আইনের শাসন থেকে বিচ্যুত করে এক ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত। গণতন্ত্র, প্রগতিশীলতা, ধর্মনিরপেক্ষতা কিংবা আইনের সুশাসন বর্তমানে এই অবৈধ সরকারের দুঃশাসনে দেশের মানুষের জন্য আকাশ কুসুম কল্পনায় পরিণত হয়েছে ।

single-ad-main-1

আমরা চরম ক্ষোভ ও ঘৃণা নিয়ে দেখছি, দেশের বিচারব্যবস্থা এই দখলদার অসাংবিধানিক শক্তির হাতের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করছে । বিচারিক প্রক্রিয়া আজ এমন এক নজিরবিহীন অধঃপতনের শিকার, যেখানে অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও জাতির বিবেক নাড়ানো মামলাগুলোর রায়কে নির্লজ্জভাবে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টে’র কার্যক্রমে পরিণত করা হয়েছে। গত কয়েক মাসের রায়গুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই সরকার কার স্বার্থ রক্ষা করছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জাতির পিতার কন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো এবং ২৪ জন আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীকে হত্যাকারী সকল আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হলো।

সম্প্রতিকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যা মামলায় দণ্ডিত জামায়াত-শিবিরের সকল চিহ্নিত অপরাধীদের মুক্তি দিয়ে তারা ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসকে কলুষিত করেছে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হলো, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছিল, সেই ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে খালাস দেওয়া, যা প্রকারান্তরে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সরাসরি অবমাননা। শুধু তাই নয়, যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, আজ সেই মঞ্চে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রহসনের বিচার চালানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

এই রায়গুলোর মাধ্যমে একদিকে যেমন শীর্ষ জঙ্গী থেকে শুরু করে কুখ্যাত শীর্ষ সন্ত্রাসী পর্যন্ত সবাই বিচারিক প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি এক হাস্যকর ও নিষ্ঠুর বাস্তবতা তৈরি হয়েছে মুদ্রার ওপিঠে। দেশের গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, এমনকি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ পর্যন্ত উল্লেখ করছে যে, সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অপব্যবহার করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নিরীহ নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালানো হচ্ছে! এটি কেবল অমানবিক নয়, এই বিপরীতমুখী বিচারিক প্রক্রিয়া বিশ্বের কাছে আমাদের বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে এক হাস্যকর তামাশায় পরিণত করেছে।

single-ad-main-2

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই বিচারিক প্রহসন, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং আইসিটি ট্রাইব্যুনালকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং এসকল রায়কে প্রত্যাখ্যান করছে। এই অবৈধ ও অসাংবিধানিক দখলদার সরকারের সকল প্রকার গণবিরোধী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। ছাত্র সমাজকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাবো , যতক্ষণ না এই অবৈধ সরকারের পতন হচ্ছে, দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হচ্ছে এবং আইনের সুশাসন নিশ্চিত করে সকল অপশক্তির বিচার করা হচ্ছে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

দেশপক্ষ/ এমএইচ

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন