ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৮ অপরাহ্ন

মুশফিক বাংলাদেশের কিংবদন্তি

মুশফিকুর রহিমকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের কিংবদন্তি বলেছেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট শুরুর ঠিক আগের দিন মঙ্গলবার মিরপুরে ম্যাচপূর্ব আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি বলেন কোচ।

single-ad-main-1

দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০তম টেস্ট খেলার দ্বারপ্রান্তে মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের এই মাইলফলকের টেস্টের আগে কোচ ফিল সিমন্স বলেন, মুশফিক লিজেন্ড অব দ্যা গেইম। আমার মনে হয় খুব বেশি প্লেয়ার নেই টেস্টে একাধিক ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে, সে লম্বা সময় ধরে টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে গেছে। ফলে তার এসব ব্যাপারই তাকে লিজেন্ড বানিয়েছে।

মুশফিকের ব্যাপারে সিমন্স আরও বলেছেন, আসলে শুরুতেই আমাদের তার পেশাদারিত্ব (প্রফেশনালিজম), দীর্ঘায়ুর বিষয়টি স্বীকার করে নিতে হবে। তারও ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার। কারণ বাংলাদেশের মত দল যারা কিনা বছরে ১৫টি করেও টেস্ট খেলে না, তাদের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলতে অনেক লম্বা সময় লেগেছে। তার সাথে অল্প যেটুকু সময় কাজ করেছি সেখান থেকে বলতে পারি তার প্রফেশনালিজম অনেক উঁচুতে। আমি তাকে নিয়ে অনেক খুশি, এই বিশেষ উপলক্ষ্যে।

মুশফিকের লম্বা ক্যারিয়ারের পেছনের কারণ জানাতে গিয়ে ফিল সিমন্স বলেছেন, এখানে শুধুই পেশাদারিত্বের ব্যাপার। কীভাবে নিজেকে ক্যারি করবেন, নিজের খেলাকে উন্নত করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লড়বেন, এর ফলেই সে ক্রমাগত ভালো করে গেছে। ১০০ টেস্টের ক্যারিয়ার হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে সে উন্নতি করেই গেছে এবং এই পর্যায়ে এখনও খেলে যাচ্ছে।

single-ad-main-2

সিমন্স আরও বলেন, মেসেজ থাকবে পেশাদার দিকের ব্যাপারেই, সে (মুশফিক) কীভাবে নিজেকে আরও ভালো করে গড়ে তুলেছে, কীভাবে ট্রেইনিং করেছে। এই লেভেলে এসে সংগ্রাম করলে চলবে না, ক্রমাগত নিজেকে আরও ভালো বানাতে হবে। এখন প্রযুক্তির যুগ। ফলে লোকে আপনাকে নিয়ে ক্রমাগত বিশ্লেষণ করেই চলেছে। তাই নিজেকে আরও ভালো করে প্রস্তুত করতে হবে আপনাকে।

কোচ আরও বলেছেন, আমি প্রধান কোচের দায়িত্বে এসেছিলাম দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে। আমি বলেছিলাম এই সময়ে এসে তোমাকে উপভোগ করতে হবে। পারফর্ম করে গেলেই নিজে নির্ধারণ করতে পারবেন কতদিন খেলবেন। ফলে পারফরম্যান্স ঠিক থাকলে তার পেশাদারিত্বও ঠিক থাকবে।

২০০৫ সালে অভিষেকের পর ২০ বছর পাড়ি দিয়ে ১০০ টেস্টের মাইলফলকে পা রাখছেন মুশফিক। গড়ে বছরে ৫টি করে টেস্ট।

কোচ বলেছেন, ‘যে কেউই পারবে ১০০ টেস্ট খেলতে। কারণ এখন বছরে প্রায় ১২টি টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। যেমনটা আগে ছিল না। ফলে এখন আর ১০০ টেস্ট খেলতে (মুশফিকের মত) ২০ বছর লাগবে না। আরও দ্রুত খেলা যাবে। বাংলাদেশ এখন অনেক বেশি টেস্ট খেলছে। যে কেউ যারা নিজেদেরকে ক্রমাগত উন্নত করে যাচ্ছে তারাই চাইলে (১০০ টেস্ট) খেলতে পারবে।

মুশফিকের বয়স এখন ৩৮। তিনি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি থেকে ইতোমধ্যে অবসর নিয়েছেন। খেলছেন শুধু মাত্র টেস্ট। কোচ বলেছেন, শুরুতে ফিটনেসের কথা ভাবতে হবে। বর্তমানে মুশি দলের সেরা ফিটনেসসমৃদ্ধ প্লেয়ারদের একজন। শ্রীলঙ্কায় দারুণ একটি সেঞ্চুরিও করেছে। যদি পারফর্ম করে যায়, ফিট থাকে এবং খেলার ইচ্ছা থাকে তাহলে যে কেউ চালিয়ে যেতে পারে। মুশির এই ৩ ব্যাপার রয়েছে। ফলে সে চালিয়ে যেতেই পারে।

ড্রেসিংরুমে মুশফিকের প্রভাব নিয়ে ফিল সিমন্স বলেছেন, সবাই তাকে অনেক সম্মান করে, তার (মুশফিকের) কথা অনেক শোনে। সে অনেক কথাবার্তা শেয়ার করে এবং বাকিরা তার কথা শোনে। সে শেয়ার করতে চাইলে সবকিছুই করে। এই পর্যায়ে ব্যাটিংয়ের জন্য তার সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ফলে অনেক প্লেয়ারই প্রায়ই তার সাথে অনেক কথা বলে এবং তার কথাকে অনেক সম্মান করে।

এক প্রশ্নের জবাবে সিমন্স বলেছেন, টেস্ট ক্রিকেটে আপনাকে খেলে যেতে হবে। পরের বছর ১০-১২টি টেস্ট রয়েছে। এখানে অনেক তরুণ ক্রিকেটার রয়েছে তাদের জন্যও ব্যাপারটা বেশ ভালো। এই সিরিজ শেষে কিছুটা বিরতি রয়েছে তখন কিছু কাজ করতে হবে আমাদের। যেন পরের বছর প্রথম টেস্টে ভালোভাবে নামতে পারি।

দেশপক্ষ/ এমএইচ

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

ট্যাগঃ